bootstrap Paradox
bootstrap Paradox ( বুটস্ট্র্যাপ প্যারাডক্স )
আলোক রায়চৌধুরী একজন অসাধারণ বুদ্ধিমান ব্যক্তি । তিনি আনেক কিছু আবিষ্কার করতেন । তার হবি ছিল আবিষ্কার করা । কিন্তু তিনি কখনো চাইতেন না, যে তার আবিষ্কারগুলো কেউ জানুক যে তিনি বানিয়েছেন । তিনি চাইতেন তার আবিষ্কারগুলো মানুষ উপভোগ করুক । এই ব্যাপার তিনি খুব ভাবতেন । এবং তিনি মনে প্রাণে মনে করতেন এই আবিষ্কারগুলো প্রকাশ করার উপায় , আমার শেষ আবিষ্কার হবে । তার এক একটি আবিষ্কার অনবদ্য , একমাত্র তিনি জানতেন । তিনি চিন্তা করতেন এমন যদি হয়, মানুষ এই আবিষ্কারের সাহায্যের তাদের জীবনযাত্রা আরও সহজ করতে পারবে । কিন্তু জানতে পারবে না এই আবিষ্কারগুলো কে করেছে ? তার এই আবিষ্কারগুলোর নিয়ে ভগবান বা ভিন গ্রহের মানুষের প্রসঙ্গ টেনে আনবে।
রায়বাবু এই নিয়ে ভাবতে ভাবতে, সম্প্রীতি একটি ওয়েব সিরিজে কিছু লাইন উনার মনে পড়ে গেল -
where is the beginning ?
when is the beginning ?
Is there a beginning at all ?
অর্থাৎ যদি শুরুটাকে মানুষ বুঝতে না পারে । তবে কোনো আবিষ্কার, কোৌ চিন্তাধারা, তার True Origin খুঁজে বার করা যায় না । তবে মানুষ এই আবিষ্কারগুলির কোনো আবিষ্কারক কে খুঁজে পাবেনা । তিনি তার লাস্ট আবিষ্কার টাইম মেশিন স্থির করলেন । তৈরি করা এত সহজ ছিল না । তিনি তার শেষ আবিষ্কারের সাফল্য পেলেন প্রায় কুড়ি বছর পর । টাইম মেশিনের গায়ে একটি Notice লাগালেন । যে কোনো ব্যক্তি এই মেশিনকে একবার ব্যবহার করতে পারবেন, ব্যবহারের পর তার মৃত্যু হবে ।
অলোক বাবু তার সমস্ত আবিষ্কারের নথিপত্র নিয়ে টাইম ট্রাভেল মেশিনের বসে পড়লেন । এবং অতীতে কোনো এক সময় সেট করলেন । এরপর তার অন্তিম যাত্রা শুরু করলেন । তিনি অতীতে পৌঁছে গেলেন, সঙ্গে সঙ্গে তার হার্ট অ্যাটাক হলো । তিনি তীব্র যন্ত্রণায় একটা রাস্তার ধারে শুয়ে ছটফট করছিলেন । সেখানে এক বালক এলেন ।আলোক বাবুর চিনতে ভুল হল না , তার নামহীন নথিপত্র গুলি বালকের হাতে তুলে দিলেন এবং বললেন এরমধ্যে আমার আবিষ্কার গুলি লেখা আছে বড় হয়ে প্রয়োগ করো । তুমি এখান থেকে এখন যাও । বালকটি কিছু না বুঝতে পেরে নথিগুলি নিয়ে চলে গেলেন ।আলোক বাবু যে বালকের হাতে নথিগুলি তুলে দিলেন, সেই বালক আর কেউ নয় , আলোকবাবুর অতীত । শৈশবের হাতে তিনি নথিগুলি তুলে, খুবই আনন্দে আবিষ্কারের মোহ মায়া ত্যাগ করে, মুক্তি লাভ করলেন ।
এমত অবস্থায় যদি আলোকবাবু শৈশব , সেই আবিষ্কার গুলি একে একে নথি দেখে করেন , তবে এই আবিস্কারগুলি আসলে কে করেছিলেন সেই ট্রু অরিজিন হারিয়ে যাবে । আবার এই নথিপত্র গুলি কোন বৈজ্ঞানিক মহলে দিয়ে দেয় , তবে নামহীন হওয়ার জন্য , এই আবিষ্কার গুলো কে করেছেন, বোঝা যাবে না । এখন পাঠকের কাছে আমার প্রশ্ন :- আলোক বাবু যদি অতীতে গিয়ে, আলোক বাবুর শৈশবকে নথিগুলো দেয়ে, আলোক বাবু ভবিষ্যতে গিয়ে যদি সেই আবিষ্কারগুলো করেন । তবে বাস্তবে প্রকৃত আবিষ্কারক কে হলেন ? এটা সময়ের এমন একটা লুপ যে লুপে প্রকৃত আবিষ্কারক কে চিহ্নিত করা খুব মুশকিল । এই ধরনের কূটাভাস কে বলা হয় বুটস্ট্র্যাপ প্যারাডক্স ।
বুটস্ট্র্যাপ প্যারাডক্স হল এমন এক অবস্থা, ভবিষ্যৎ থেকে আসা কোনো নথি বা চিন্তা ধারা বা বস্তু, অতীতে এলে , তার true origin সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় না । অর্থাৎ যদি আমরা অতীতে সময় যাত্রা করি , তবে বুটস্ট্র্যাপ প্যারাডক্স সৃস্টি হলে , ভবিষ্যতে যে চিন্তা ধারা গুলি চলবে , কিন্তু তার আবিষ্কারক কে খুঁজে পাওয়া যাবে না । যার হাতে ভবিষ্যতে আবিষ্কার হবে , তিনি বলবেন , এই নথিগুলো তিনি কোনো এক ব্যক্তির কাছ থেকে পেয়েছেন । তিনি আমায় এই দায়িত্ব দিয়েছিলেন, আমি তার আবিষ্কারগুলো করি । অর্থাৎ এই আবিষ্কার গুলি প্রথম ব্যক্তির ক্ষেত্রে ঠিক যতোটা বাধা উৎপন্ন হয়েছিল, দ্বিতীয় ব্যক্তির ক্ষেত্রে সেই বাধা থাকা সম্ভব নয় ।
সমাপ্ত
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন